গনতান্ত্রিক নির্বাচন ও ভোটের বিধান

১/ নির্বাচন করা ও ভোট দেওয়া শিরিক।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা বলেছেন

১. শরীয়াহ বা বিধান নির্ধারণের একমাত্র অধিকার আল্লাহর

সূরা আল-আনআম (৬:৫৭)
قُلْ إِنِّي عَلَىٰ بَيِّنَةٍ مِّن رَّبِّي وَكَذَّبْتُم بِهِۦ ۚ مَا عِندِى مَا تَسْتَعْجِلُونَ بِهِۦٓ ۚ إِنِ ٱلْحُكْمُ إِلَّا لِلَّهِ ۖ يَقُصُّ ٱلْحَقَّ وَهُوَ خَيْرُ ٱلْفَٰصِلِينَ

অর্থ:
বলুন, “আমি আমার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট প্রমাণের ওপর প্রতিষ্ঠিত, অথচ তোমরা তাকে অস্বীকার করছো। তোমরা যে বিষয়ে দ্রুত ফয়সালা চাইছো, তা আমার হাতে নেই। ফয়সালা একমাত্র আল্লাহর ইখতিয়ার। তিনিই সত্য বর্ণনা করেন এবং তিনিই শ্রেষ্ঠ ফয়সালাকারী।”

উপরোক্ত আয়াত এই কথা সুস্পষ্ট বর্ণনা করে যেকোনো বিধান বা ফায়সালা রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এখতিয়ারে নেই। সেখানে উম্মতের উলামা বা রাজনৈতিক নেতৃত্বের তো কোন অধিকারই নেই৷

সূরা আল-আনআম (৬:৬২)
ثُمَّ رُدُّوٓا۟ إِلَى ٱللَّهِ مَوْلَىٰهُمُ ٱلْحَقِّ ۚ أَلَا لَهُ ٱلْحُكْمُ وَهُوَ أَسْرَعُ ٱلْحَٰسِبِينَ

অর্থ:
“অতঃপর সবাই আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে, যিনি প্রকৃত বিচারক। জেনে রাখো, ফয়সালা একমাত্র তাঁরই ইখতিয়ার, আর তিনি হিসাব গ্রহণে সর্বাধিক দ্রুত।”

এই আয়াত দ্বারাও বোঝা গেলো বিধান এরকম আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লার পক্ষ থেকে হতে হবে।

সূরা আশ-শূরা (৪২:১০)
وَمَا ٱخْتَلَفْتُمْ فِيهِ مِن شَىْءٍ فَحُكْمُهُۥٓ إِلَى ٱللَّهِ ۚ ذَٰلِكُمُ ٱللَّهُ رَبِّى عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَإِلَيْهِ أُنِيبُ

অর্থ:
“তোমরা যে বিষয়ে মতভেদ করো, তার চূড়ান্ত ফয়সালা আল্লাহর হাতেই। এটাই আল্লাহ, আমার প্রতিপালক। আমি তাঁরই ওপর নির্ভর করি এবং তাঁরই দিকে ফিরে আসি।”

এই আয়াত থেকেও একই বার্তা পেলাম। বিধান একমাত্র আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লার পক্ষ থেকে।

২. আল্লাহ ছাড়া বিধানদাতা নেই

সূরা আল-মায়েদা (৫:৪৪)
وَمَن لَّمْ يَحْكُم بِمَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ فَأُو۟لَٰئِكَ هُمُ ٱلْكَٰفِرُونَ

অর্থ:
“যারা আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান অনুযায়ী ফয়সালা করে না, তারাই কাফির।”

এরপর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা বলছেন, যারা আল্লাহর বিধান দিয়ে ফয়সালা করে না তারা কাফির।

সূরা আল-মায়েদা (৫:৫০)
أَفَحُكْمَ ٱلْجَٰهِلِيَّةِ يَبْغُونَ ۚ وَمَنْ أَحْسَنُ مِنَ ٱللَّهِ حُكْمًۭا لِّقَوْمٍۢ يُوقِنُونَ

অর্থ:
“তারা কি জাহেলি যুগের বিধান চায়? অথচ যারা দৃঢ়বিশ্বাসী, তাদের জন্য আল্লাহর বিধানের চেয়ে উত্তম বিধান আর কে দিতে পারে?”

এবার আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা বলছেন, তারা কি জাহিলিয়াত (কুফর) এর বিধান চায়।

৩. শরীয়াহ (আইন) ও বিধান দেওয়া শুধুমাত্র আল্লাহর কাজ

সূরা আশ-শূরা (৪২:১৩)
شَرَعَ لَكُم مِّنَ ٱلدِّينِ مَا وَصَّىٰ بِهِۦ نُوحًۭا وَٱلَّذِىٓ أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ

অর্থ:
“তিনি তোমাদের জন্য সেই দ্বীন নির্ধারণ করেছেন, যা তিনি নূহকে আদেশ করেছিলেন এবং যা তোমার প্রতি ওহি দ্বারা প্রেরণ করেছেন।”

ত্বকী উসমানী হাফিঃ, মুফতি মুহাম্মদ শাফী রহিঃ, সদর সাহেব হুজুর রহিমাহুল্লাহ্ তো নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বা অন্য নবীদের চেয়ে বড় নন। যেখানে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লার বলছেন, তোমাদের জন্য আমি শরিয়ত নির্ধারণ করেছি। এবং নূহ আলাইহিস সালাম সহ সকলের জন্য। সেখানে শরিয়তের মধ্যে তুমি যুক্ত করার কে?

৪. কোনো বিধান তৈরি করা আল্লাহর অনুমতি ছাড়া শিরিক

সূরা আশ-শূরা (৪২:২১)
أَمْ لَهُمْ شُرَكَآءُ شَرَعُوا۟ لَهُم مِّنَ ٱلدِّينِ مَا لَمْ يَأْذَنۢ بِهِ ٱللَّهُ

অর্থ:
“তাদের কি এমন অংশীদার আছে, যারা তাদের জন্য এমন দ্বীন প্রবর্তন করেছে, যার অনুমতি আল্লাহ দেননি?”

যেহেতু শরিয়তে ভোট বা নির্বাচন নেই, তাকে বৈধ বলা বা ওয়াজিব বলা সুস্পষ্ট শরিয়তে নতুন কিছু যুক্ত করা যার অনুমতি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা দেননি। তাহলে কি তোমাদের আলেমদের কে আল্লাহর শরিক সাব্যস্ত করছো?

সূরা ইউসুফ (১২:৪০)
إِنِ ٱلْحُكْمُ إِلَّا لِلَّهِ ۖ أَمَرَ أَلَّا تَعْبُدُوا۟ إِلَّآ إِيَّاهُ

অর্থ:
“তাদের কি এমন অংশীদার আছে, যারা তাদের জন্য এমন দ্বীন প্রবর্তন করেছে, যার অনুমতি আল্লাহ দেননি?”

এরপর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা বলছেন, বিধান শুধুমাত্র আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লার। তাই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা ছাড়া অন্য কারো বৈধ বা ওয়াজিব কে আমরা গ্রহণ করবো না। যারা গ্রহণ করবে তারা উপরের আয়াতগুলোর মাধ্যমে কুফরে লিপ্ত হবে। তবে তাবীল করার কারণে আমরা ইসলামি দলগুলোকে তাকফির করিনা বরং বিদাতী মনে করি।

বোঝা গেলো আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা ছাড়া কাউকে বিধানদাতা মনে করা শিরিক। আর ভোট দেওয়ার মাধ্যমে জনগণ সংসদ সদস্যদের কে বিধান তৈরি করার অধিকার দেয়। আর এটা সুস্পষ্ট শিরিক৷

২/ ভোট কে শাহাদাহ্ বলা ইলমের খিয়ানত উসূলের খিলাফ।

আমাদের জানা দরকার শাহাদাহ্ কত প্রকার? শাহাদাহ্ কী ? শাহাদাহ্ কে দিতে পারবে? সাক্ষী কতজন হবে? শাহাদাহ্ কেন?

এক.শাহাদাহর প্রকারভেদ:

(ক) ইসলামি বিশ্বাসের সাক্ষ্য (شهادة التوحيد)

আল্লাহর একত্ববাদ ও রাসূল ﷺ-এর নবুয়তের সাক্ষ্য দেওয়া।

(খ) আইনগত সাক্ষ্য (شهادة في القضاء)

আদালতে সত্য সাক্ষ্য প্রদান করা।

(গ) সাধারণ সাক্ষ্য (شهادة عامة)

কোনো ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করার জন্য সাক্ষ্য দেওয়া।

দুই.শাহাদাহ্ কী
قال في “بدائع الصنائع” (٦/ ٢٦٩):
“الشهادة إخبار بحق للغير على غير في مجلس القاضي”

বাংলা অর্থ:
“শাহাদাহ হলো—বিচারকের সামনে অন্য কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যক্তির অধিকার সংক্রান্ত তথ্য জানানো।”

তাহলে কি আপনারা নির্বাচন কমিশন কে বিচারক নির্ধারণ করলেন না। অথচ নির্বাচণ কমিশন কে মেনে নেওয়া, তাদের শর্ত শারায়েত মেনে নেওয়া কুফর।

বৈশিষ্ট্য:
ক.এটি বিচারকের সামনে প্রদান করতে হয়।
খ.সাধারণত এটি কোনো বিরোধ বা অপরাধের ক্ষেত্রে উপস্থাপন করা হয়।
গ.এটি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

ক.নির্বাচন এর ক্ষেত্রে একজন কে বিচারক মানতে হয়। সেই বিচারক অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অথবা নির্বাচন কমিশন। যারা সুস্পষ্ট কুফরি নীতি তে এই নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। আপনি যদি নির্বাচনে অংশ নেন তাহলে আপনাকেও তা মেনে নিতে হবে। এবার বলেন এটা কুফর কি না?

খ. বিরোধ বা অপরাধের জন্য শাহাদাহ্ প্রয়োজন। এখন এখানে বিরোধ কি নিয়ে? শরিয়ত কায়েম করবো কি করবো না তা নিয়ে। আচ্ছা এবিষয়ে কোন বিরোধ বৈধ? না কক্ষনও এবিষয়ে বিরোধ বৈধ নয়। যারা এবিষয়ে বিরোধ করবে তারা কাফির। আর কাফিরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। সেখানে কোন বিচার নয়। বিচার তখন যখন তারা শরিয়া মেনে নেয়।

গ. ন্যায় বিচার তখন হবে যখন তা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লার আইন দিয়ে হবে। এখানে বিচার হচ্ছে কুফরি আইন দিয়ে। তাহলে এখান থেকে ন্যায় বিচার তালাশ করা কুফর।

তিন.সাক্ষী হওয়ার প্রধান শর্তসমূহ:

১. ইসলাম (الإسلام)

সাক্ষী অবশ্যই একজন মুসলিম হতে হবে।

কাফির বা মুশরিকের সাক্ষ্য সাধারণত গ্রহণযোগ্য নয়। যারা ভোট দেয় সবাই কি মুসলিম? তাহলে কেন অমুসলিম এখানে অংশ নিবে?

কুরআনের দলিল:
وَأَشْهِدُوا ذَوَيْ عَدْلٍ مِّنكُمْ
“তোমাদের মধ্য থেকে ন্যায়পরায়ণ দু’জনকে সাক্ষী রাখো।” (সূরা তালাক: ২)

২. বালেগ বা প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া (البلوغ)

শিশুদের সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য নয়, কারণ তারা বাস্তবতা ও দায়িত্বের পূর্ণ উপলব্ধি রাখে না।

তবে কোনো শিশু যদি কোনো অপরাধ সরাসরি দেখে এবং তাতে তার সম্পৃক্ততা থাকে, তাহলে কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে তার সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য হতে পারে।

৩. বিবেকবান ও সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন হওয়া (العقل)

পাগল, মাতাল বা মানসিকভাবে অপ্রকৃতস্থ ব্যক্তির সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য নয়।

মাতাল লোকও তো ভোট দিতে পারে।

৪. ন্যায়পরায়ণ হওয়া (العدالة)

সাক্ষীকে অবশ্যই ন্যায়পরায়ণ, সত্‍ চরিত্রের অধিকারী হতে হবে।

মিথ্যাবাদী, পাপাচারী বা ফাসিক ব্যক্তির সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য নয়। অথচ এরা ভোট দিতে পারে।

কুরআনের দলিল:
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِن جَاءَكُمْ فَاسِقٌۢ بِنَبَإٍ فَتَبَيَّنُوا
“হে ঈমানদারগণ! যদি কোনো ফাসিক তোমাদের কাছে কোনো সংবাদ নিয়ে আসে, তবে তা ভালোভাবে যাচাই করে দেখো।” (সূরা আল-হুজরাত: ৬)

৫. সত্যবাদী হওয়া (الصدق)

সাক্ষীর অবশ্যই সত্যবাদী হতে হবে।

মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া ইসলামে একটি বড় গুনাহ। অথচ মিথ্যুক ভোট দিতে পারে।

হাদিসের দলিল:
قال النبي ﷺ: “ألا وقول الزور، وشهادة الزور”.
“সাবধান! মিথ্যা কথা বলা এবং মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া।” (সহিহ বুখারি: ২৬৫৪, সহিহ মুসলিম: ৮৭)

৬. প্রত্যক্ষদর্শী হওয়া (المشاهدة بنفسه)

সাক্ষীকে অবশ্যই ঘটনাটি নিজ চোখে দেখা বা সরাসরি শোনা থাকতে হবে।

অনুমান, গুজব বা শোনা কথা ভিত্তিতে সাক্ষ্য দেওয়া জায়েজ নয়। ভোট তো অনুমান করেই দেয়। কতজন ভোটার নিশ্চিত হয় যে প্রার্থী সত ও যোগ্য?

কুরআনের দলিল:
إِلَّا مَن شَهِدَ بِالْحَقِّ وَهُمْ يَعْلَمُونَ
“শুধু তারাই সাক্ষ্য দিতে পারবে, যারা সত্যের সাক্ষ্য দেয় এবং জানে (সেটি সত্য)।” (সূরা যুখরুফ: ৮৬)

৭. স্বার্থহীন হওয়া (عدم المصلحة الشخصية)

যদি সাক্ষীর ব্যক্তিগত স্বার্থ থাকে, তাহলে তার সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য হবে না।

যেমন, বাবা তার সন্তানের পক্ষে বা বিচারক তার নিজের পক্ষে সাক্ষ্য দিতে পারবে না। অথচ ভোটে বেশির ভাগ লোক স্বার্থ খুঁজে ভোট দেয়।

ফিকহি দলিল:
قال في “بدائع الصنائع” (٦/ ٢٦٩):
“لا تجوز شهادة الإنسان لنفسه، ولا لمن فيه تهمة.”
“কোনো ব্যক্তি নিজের জন্য বা যার সাথে স্বার্থসংযোগ আছে, তার পক্ষে সাক্ষ্য দিতে পারবে না।”

চার. সাক্ষ্যের সংখ্যা (عدد الشهود) নির্দিষ্ট হওয়া

হুদুদ (শরীয়াহর নির্ধারিত শাস্তি) সংক্রান্ত বিষয়ে: ৪ জন পুরুষ সাক্ষী প্রয়োজন (যেমন: ব্যভিচারের ক্ষেত্রে, সূরা নূর: ৪)।

অর্থনৈতিক বা সাধারণ বিষয়ে: ২ জন পুরুষ সাক্ষী বা ১ জন পুরুষ ও ২ জন মহিলা সাক্ষী প্রয়োজন (সূরা বাকারা: ২৮২)।

নারী সাক্ষী: কিছু বিষয়ে শুধুমাত্র নারীদের সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য (যেমন: প্রসূতি ও নারীদের সংক্রান্ত বিষয়ে)।

অথচ ভোটে এর কোন সংখ্যা নেই!

قال في “بدائع الصنائع” (٦/ ٢٦٩):
“أما الحاجة إلى شرعية الشهادة: فلأن الحقوق تتنازع، والمظالم تكثر، والناس لا يتركون المطالبة بحقوقهم، فلو لم تشرع البينة لادعى كل واحد ما ليس له، وأدى إلى إبطال الحقوق، فشُرعت الشهادة لإثبات الحقوق، وقطع المنازعات”

বাংলা অনুবাদ:
“শাহাদাহর (সাক্ষ্য) প্রয়োজনীয়তা হলো: কারণ মানুষের মধ্যে অধিকার নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়, জুলুম বৃদ্ধি পায়, এবং মানুষ তাদের অধিকার দাবি করতে ছাড়ে না। যদি সাক্ষ্যকে (বিয়্যিনাহ) শরীয়তে স্বীকৃতি না দেওয়া হতো, তাহলে প্রত্যেকেই তার অধিকারের বাইরেও দাবি করত, যার ফলে প্রকৃত অধিকার বাতিল হয়ে যেত। তাই সাক্ষ্যকে শরীয়তে নির্ধারিত করা হয়েছে, যেন অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয় এবং বিরোধ মিটিয়ে ফেলা যায়।”

অথচ ভোট বা নির্বাচনের মাধ্যমে বাইয়্যিনাহ্ তালাশ করা উদ্দেশ্য নয়। এখানে অধিকাংশের মতামত উদ্দেশ্য তা শাহাদাহ্ হতে পারে এ। বরং দু’জন লোকের শাহাদাহ্ হলেই বায়্যিনাহ হয়ে যায়।

৩/ শাহাদাহ্ এর দ্বারা কি নির্বাচন হয়?

শাহাদাহ (সাক্ষ্য) সাধারণত কোনো ঘটনা বা অধিকার প্রমাণের জন্য ব্যবহৃত হয়, যেখানে একজন সাক্ষী তার জানা ও প্রত্যক্ষ করা বিষয় সম্পর্কে সঠিক তথ্য উপস্থাপন করে।

অন্যদিকে, আমির নির্বাচন একটি ভিন্ন প্রক্রিয়া, যা সাধারণত দুটি উপায়ে হতে পারে:

১. আহলুল হাল ওয়া আকদ (أهل الحل والعقد) দ্বারা নির্বাচন
২. উম্মতের সম্মতি ও বাইআত (البيعة) দ্বারা অনুমোদন
শাহাদাহ এখানে সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যম নয়, তবে আমিরের যোগ্যতা যাচাই এবং তার বিষয়ে সাক্ষ্য প্রদান করতে পারে।

ইসলামের দৃষ্টিতে আমির নির্বাচন
১. আহলুল হাল ওয়াল আকদ দ্বারা নির্বাচন

এটি হলো সমাজের বিজ্ঞ, প্রভাবশালী ও যোগ্য ব্যক্তিদের একটি পরিষদ, যারা যোগ্য আমির নির্বাচন করেন।
ইবনে খালদুন বলেন:
“খিলাফতের শর্ত হলো, আহলুল হাল ওয়াল আকদ-এর মাধ্যমে নেতা নির্ধারিত হওয়া।”
এক্ষেত্রে শাহাদাহ ভূমিকা রাখতে পারে:
আমির প্রার্থীর ন্যায়পরায়ণতা, যোগ্যতা ও চরিত্রের বিষয়ে সাক্ষ্য দেওয়া হতে পারে।
যদি কোনো ব্যক্তি নিজের যোগ্যতা দাবি করে, তবে সাক্ষীদের মাধ্যমে তার সত্যতা যাচাই করা হতে পারে।
২. বাইআত (البيعة) দ্বারা অনুমোদন
ইসলামী খেলাফতের ইতিহাসে দেখা যায়, আমির নির্বাচন সাধারণত জনগণের বাইআতের মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হয়।
হাদিসের দলিল:
مَن ماتَ ولَيْسَ في عُنُقِهِ بَيْعَةٌ ماتَ مِيتَةً جَاهِلِيَّةً
“যে ব্যক্তি এমন অবস্থায় মারা যায় যে, তার গলায় কোনো আমিরের প্রতি বাইআত নেই, সে জাহেলি মৃত্যুবরণ করল।” (সহিহ মুসলিম: ১৮৫১)
এক্ষেত্রে শাহাদাহ ভূমিকা রাখতে পারে:
জনগণ আমিরের যোগ্যতা সম্পর্কে সাক্ষ্য দিতে পারে।
আমিরের পূর্বের কর্ম ও চরিত্র যাচাই করতে সাক্ষ্য গ্রহণ করা যেতে পারে।

তাহলে এখন বলেন শর্ত বাদ দিয়ে নির্বাচণ কীভাবে বৈধ হতে পারে? তাহলে এখন আপনি ফয়সালা করেন তারা কি সত্য বললো নাকি সত্য গোপন করলো?

উপরের আলোচনা দ্বারা বোঝা গেলো ভোট দেওয়া শিরিক। ভোট কে শাহাদাহ্ বলা তাহরিফ।

যারা নির্বাচন কে শুরা বা বাইআহ্ বলে তাদের জন্য প্রবন্ধ আসছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *