পুঁজিবাদী শিক্ষাব্যবস্থা: একটি অদৃশ্য কারাগার

আমাদের এডুকেশন সিস্টেম থেকে শুরু করে প্রতিটি সেক্টর হলো পুঁজিবাদ চর্চার ক্ষেত্র। আরও পরিস্কার করে বলতে গেলে পুঁজিবাদের এক একটা কল। আপনারা নিশ্চয় আধুনিক মেশিনগুলো দেখেছেন, ধরুন আপনি ১০০ বোতলের মুখ তৈরি করবেন, পরিমাণ মতো প্লাস্টিক সামগ্রী কিনে আধুনিক মেশিনে দিলে এরপর সেখানে এলেক্ট্রিক কানেকশন দিলে অটোমেটিক ১০০ মুখ তৈরি হবে। মেশিন টা এভাবে সেট করা হয়েছে যে বিকল্প কোন কিছু বের হবে না।

সেইম আমাদের এডুকেশন সিস্টেম, আমাদের সোশ্যাল সিস্টেম, আমাদের ইকোনমি ও রাষ্ট্র সিস্টেম এমন যে, সে আপনাকে পুঁজিবাদী বানিয়েই ছাড়বে। আপনি পুঁজিবাদের বাহিরে থাকতে চাইলেও পারবেন না। আপনাকে পুঁজিবাদী হতেই হবে। আপনি সর্বোচ্চ এতটুকু করতে পারবেন, আপনি পুঁজিবাদ কে অন্তরে ঘৃণা করবেন কিন্তু যতদিন এই রাষ্ট্র সিস্টেম আছে, যতদিন এই সোশ্যাল সিস্টেম আছে, যতদিন এই এডুকেশন সিস্টেম আছে ততদিন আপনি পুঁজিবাদ থেকে বের হতে পারবেন না।

এ-সব সিস্টেমের দরজা বলা চলে এডুকেশন সিস্টেম কে। অর্থাৎ আপনি যত স্ট্রং এডুকেশন সিস্টেমে আপনার বাচ্চা কে ভর্তি করবেন আপনার বাচ্চা ততবেশি পুঁজিবাদী হয়ে গড়ে উঠবে। এখানে এসে ম্যালকম এক্স এর একটা উক্তি বলি, আমিরিকায় যখন বৃটিশ শাসন চলছিল তখন দুই ধরনের নিগ্রো ছিল
১/ হাউস নিগার
২/ ফিল্ড নিগার
তুলনামূলক বেশি অনুগতদের দিয়ে বাড়ির কাজটাজ করানো হতো। আর বাকিরা হতো ফিল্ড নিগার ( যারা মাঠে বা কর্মক্ষেত্রে কাজ করতো)। মালিকরা হাউস নিগার কে শিক্ষা দিতো। অতঃপর ফিল্ড নিগারদের সামনে তাকে উপস্থাপন করা হতো একজন সফল মানুষ হিসেবে। কখনো কখনো হাউস নিগার কে মালিক তার কোম্পানির বড়ো বড়ো পদে বসাতো।কোম্পানির ম্যানেজমেন্টের দায়িত্ব এসব হাউস নিগারদের কে সাধারণত দেওয়া হতো না বরং সেখানে ইংরেজদের নিয়োগ দেওয়া হতো। তবে ছোট খাটো কিছু নিম্নমানের চাকরি দেওয়া হতো এদের কে। আর এগুলো কে ফুলেফেঁপে বড় করে দেখানো হতো। বলা হতো দেখো ওরা কতটা সফল!

বর্তমানেও এর প্র্যাক্টিস কিন্তু আমাদের দে-শে ও সমাজে বিদ্যমান। বিবিসি সে চাকরি পাওয়া, বা ইংরেজ কোন কোম্পানি তে চাকরি পা-ওয়া কে আমরা খুব বড়ো কিছু মনে করি। পক্ষান্তরে আরেকজন উদ্যোক্তা তারচে কয়েকগুণ বেশি ইনকাম করলেও তাকে আমরা মূল্যায়ন করি না। আর পুঁজিবাদের সবচেয়ে বড় সমস্যায় হলো এখানে আমাদের মূল্যায়ন পদ্ধতি হয়ে গেছে অর্থে। যার অর্থ বেশি তার মূল্য বেশি, যারা অর্থ নেই তার মূল্যও নেই।

আমি মূল কথায় আসি! এডুকেশন সিস্টেমের আপনি যত হাই ক্লাস প্রতিষ্ঠানে আপনার বাচ্চাকে ভর্তি করবেন, আপনার বাচ্চা ততবেশি পুঁজিবাদী হয়ে গড়ে উঠবে। আপনি যদি গ্রামের স্কুলে ভর্তি করেন তাহলে সে ২০% পুঁজিবাদী হয়ে গড়ে উঠবে। পক্ষান্তরে আপনি যদি শহরের কোন ভালো স্কুলে ভর্তি করেন তাহলে সে ৫০% পুঁজিবাদী হয়ে গড়ে উঠবে। আর আপনি যদি ইংলিশ মিডিয়ামে ভর্তি করেন তাহলে সে ১০০% পুঁজিবাদী হয়ে গড়ে উঠবে।

সচারাচর বেশিরভাগ মানুষ কে দেখা যায় তারা সন্তান কে ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াতে চায়। আসলে ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ানোর চিন্তাটা এতো গলত যে, এই চিন্তাভাবনায় প্রকাশ করে আপনি পুঁজিবাদ দ্বারা প্রভাবিত। কারণ আপনি হাই ক্লাস মেইনটেইন করতে চাচ্ছেন অথচ সিস্টেম হলো পুঁজিবাদের দেওয়া। কিন্তু আপনি বিকল্প হাই ক্লাস সিস্টেম কেনো খুঁজছেন না।

ড. আফিয়ার প্রতি আমিরিকার এতো ক্ষোভ কেন তা কি আপনার জানা আছে? ক্ষোভের কারণ এটাই যে, আমিরিকা তাকে বহু সার্টিফিকেট দিয়েছে। তাকে তৈরি করেছে পুঁজিবাদের একজন খাদেম হিসেবে। আর সেই আফিয়া আমিরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধকারী বাহিনী কে সাহায্য করে! মালালা প্রথমে হয়তো বাবা-মার কারণে শরিয়ার বিরোধিতা করতো, বর্তমানে সে বের হতে চেষ্টা করলেও পারবে না। মামলা যদি কখনো শরিয়া আইনের পক্ষে অবস্থান নেই, তার অবস্থাও আফিয়া সিদ্দিকার মতোই হবে। আবার ফাতিহা আয়াত আগামী দিনের মালালা হতে যাচ্ছে, সেও যদি কখনো শরিয়া আইনের পক্ষে অবস্থান নেই তার-ও অবস্থা এমনই হবে।

আপনি এই সিস্টেমে বেশিদূর যেতে পারবেন না। হয় আপনার অবস্থা মালালার মতো হবে। আপনি পশ্চিমের তাবেদার হবেন, নতুবা আপনি ড. আফিয়ার মতো নির্যাতিত হবেন। আপনি যদি ওদের কাছে এরচেয়ে বেশি কিছু আশা করেন তাহলে তা হবে আপনার বোকামি।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা পবিত্র কোরআনে সুস্পষ্ট বলেছেন,
وَلَن تَرْضَىٰ عَنكَ ٱلْيَهُودُ وَلَا ٱلنَّصَـٰرَىٰ حَتَّىٰ تَتَّبِعَ مِلَّتَهُمْ ۗ قُلْ إِنَّ هُدَى ٱللَّهِ هُوَ ٱلْهُدَىٰ ۗ وَلَئِنِ ٱتَّبَعْتَ أَهْوَآءَهُم بَعْدَ ٱلَّذِى جَآءَكَ مِنَ ٱلْعِلْمِ ۙ مَا لَكَ مِنَ ٱللَّهِ مِن وَلِىٍّ وَلَا نَصِيرٍ

অর্থ:
“ইহুদিরা এবং খ্রিস্টানরা কখনোই তোমার প্রতি সন্তুষ্ট হবে না, যতক্ষণ না তুমি তাদের ধর্মের অনুসরণ করো। বল, ‘আল্লাহর দেওয়া পথনির্দেশই প্রকৃত পথনির্দেশ।’ আর যদি তুমি সেই জ্ঞান লাভের পরও তাদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ করো, তবে তোমার জন্য আল্লাহর কাছ থেকে কোনো অভিভাবক বা সাহায্যকারী থাকবে না।” (২:১২০)

আপনি কি মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লার এই আয়াত কে অস্বীকার করতে পারবেন? অসম্ভব! অতএব আপনি সিদ্ধান্ত নেন। আপনার সন্তান কে অতিরিক্ত ফেতনায় ফেলবেন না। পশ্চিমাদের যতকাছে নিবেন, আপনার সন্তান ততবেশি ফেতনায় পতিত হবে।

তাহলে প্রশ্ন করতে পারেন আমাদের সন্তান কে তাহলে কি অশিক্ষিত করে রাখবো? না তাকে কখনো অশিক্ষিত করে রাখবেন না। তাকে শেখাবেন, তাকে শিক্ষিত করে গড়ে তুলবেন। আমার কথা শুনে মনে করছেন তাকে মাদরাসায় দিতে বলছি, না তাকে তথাকথিত মাদরাসায় দিতেই হবে তার কোন বাধ্যবাধকতা নেই। বরং বিকল্প হলো সালাফদের এডুকেশন সিস্টেম। ঘরের মাদরাসা! আমি আপনাদের কে সূরা মুমিনের কয়েকটি আয়াত শোনাচ্ছি, যা আধুনিক পুঁজিবাদী এডুকেশন সিস্টেম থেকে শুরু করে ইকোনমি পর্যন্ত বর্ণনা করে।

২৪:৩৪
وَلَقَدْ أَنزَلْنَا إِلَيْكُمْ ءَايَـٰتٍۢ مُّبَيِّنَـٰتٍۢ وَمَثَلًۭا مِّنَ ٱلَّذِينَ خَلَوْا۟ مِن قَبْلِكُمْ وَمَوْعِظَةًۭ لِّلْمُتَّقِينَ
অর্থ:
“আমরা তোমাদের প্রতি সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ নাজিল করেছি এবং তাদের উদাহরণ যারা তোমাদের পূর্বে অতিক্রান্ত হয়েছে এবং পরহেজগারদের জন্য উপদেশ।”

এই আয়াতে আল্লাহু সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা, সুস্পষ্ট একটা বিধানের কথা বলছেন। যেই বিধানে এডুকেশন সিস্টেম থেকে শুরু করে বিশ্ব সিস্টেম পর্যন্ত রয়েছে।
এরপর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা পূর্ববর্তী লোকদের কথা বলেছেন, যাদের একাংশ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লার অবতীর্ণ বিধান মেনে সফল হয়েছে, অপরাংশ বিফল হয়েছে তা অমান্য করে।

এরপর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা আগামী প্রজন্মের মুমিনদের জন্য নসিহত হিসেবে এই কোরআন কে পাঠিয়েছেন।

তারমানে হলো, কোরআন ছাড়া অন্য কোন বিধান মানা যেমন কুফর, তেমনি কোরআন ছাড়া অন্য কোন বিধানের দরকার নেই কারণ পবিত্র কোরআনে সবকিছু রয়েছে।
২৪:৩৫
ٱللَّهُ نُورُ ٱلسَّمَـٰوَٟتِ وَٱلْأَرْضِ ۚ مَثَلُ نُورِهِۦ كَمِشْكَوٰةٍۢ فِيهَا مِصْبَاحٌۭ ٱلْمِصْبَاحُ فِى زُجَاجَةٍۢ ٱلزُّجَاجَةُ كَأَنَّهَا كَوْكَبٌۭ دُرِّىٌّۭ يُوقَدُ مِن شَجَرَةٍۢ مُّبَـٰرَكَةٍۢ زَيْتُونَةٍۢ لَّا شَرْقِيَّةٍۢ وَلَا غَرْبِيَّةٍۢ يَكَادُ زَيْتُهَا يُضِىٓءُ وَلَوْ لَمْ تَمْسَسْهُ نَارٌۭ ۚ نُّورٌ عَلَىٰ نُورٍۢ ۗ يَهْدِى ٱللَّهُ لِنُورِهِۦ مَن يَشَآءُ ۚ وَيَضْرِبُ ٱللَّهُ ٱلْأَمْثَـٰلَ لِلنَّاسِ ۗ وَٱللَّهُ بِكُلِّ شَىْءٍ عَلِيمٌۭ
অর্থ:
“আল্লাহ আসমানসমূহ এবং জমিনের নূর। তাঁর নূরের দৃষ্টান্ত একটি কূপের মত, যার মধ্যে একটি প্রদীপ আছে। প্রদীপটি একটি কাচের মধ্যে এবং কাচটি এমন যেন একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র। এটি জ্বালানো হয় একটি বরকতময় বৃক্ষ, যেটি জলপাই গাছ, যা পূর্বেও নয় এবং পশ্চিমেও নয়। এর তেল এমন যেন আগুন স্পর্শ না করেও প্রায় জ্বলে উঠে। এটি নূরের উপর নূর। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা নিজের নূরের দিকে পথ দেখান। আর আল্লাহ মানুষকে উদাহরণ দেন। আর আল্লাহ সবকিছু সম্পর্কে সর্বজ্ঞ।”

এরপর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা ঐ পরিবারের উদহারন দিচ্ছেন যেই পরিবার জীবনের সবক্ষেত্রে পবিত্র কোরআনের অনুসরণ করে। উদহারন টা অনুবাদ থেকে আরেকবার পড়ুন। এরপর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা ধমক দিয়ে বলছেন, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা যাকে ইচ্ছে তাকে হেদায়েত দেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা মানুষের জন্য উদহারন পেশ করেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা সবকিছুই জানেন। তাহলে জানার জন্য কেনো ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াতে হবে? সার্টিফিকেটের আশায় ওখানে যতদিন তাকে পড়াবেন ততদিন সে পবিত্র কোরআন থেকে মাহরুম থাকবে।

২৪:৩৬
فِى بُيُوتٍ أَذِنَ ٱللَّهُ أَن تُرْفَعَ وَيُذْكَرَ فِيهَا ٱسْمُهُۥ يُسَبِّحُ لَهُۥ فِيهَا بِٱلْغُدُوِّ وَٱلْأٓصَالِ
অর্থ:
“এসব ঘরে আল্লাহ আদেশ দিয়েছেন সেগুলোকে উচ্চ মর্যাদা দেওয়ার এবং সেগুলোতে তাঁর নাম স্মরণ করার। সেখানে সকালে ও সন্ধ্যায় তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করা হয়।”

তাহলে কোথায় পড়াবেন সেই উত্তর এই আয়াতে দেওয়া আছে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা আদেশ করছেন ঘরগুলোতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লার কোরআন ও তার একত্ববাদ ও আহকাম নিয়ে আলোচনা করার। সকাল-সন্ধায় আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লার তাসবীহ্ পাঠ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। সালাফগণ তাদের বাচ্চাদের তারবিয়াহ্ ও তালিম কিভাবে করতেন তা দেখলেই এই আয়াতের মর্ম বুঝতে পারবেন।

সাহাবিদের কে পরিকল্পিতভাবে তৈরি করা হয়নি। বরং সাহাবিদের কে তৈরি করেছেন স্বয়ং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা। তবে তাবেঈ ও তাবে তাবেঈগণ কে পরিকল্পিত তৈরি করা হয়েছে। আবার সাহাবিদের মধ্যে যাদের বয়স কম ছিল তাদের কেও তৈরি করা হয়েছে। যেমন, হাসান, হুসাইন, আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস, আনাস বিন মালেক, আব্দুল্লাহ ইবনে উমন এরকম অনেকেই।

সালাফদের মধ্যে
১. সাঈদ ইবনে মুসাইয়িব (রহ.)।তাঁকে “তাবেঈদের নেতা” (سيد التابعين) বলা হয়।মদিনায় বসবাস করতেন এবং হাদিস, ফিকহ এবং তাফসিরে বিশেষজ্ঞ ছিলেন।

২. হাসান আল-বাসরি (রহ.)।বসরার বাসিন্দা এবং ইসলামের প্রাথমিক যুগে আত্মশুদ্ধি ও ইখলাসের মূর্ত প্রতীক।ইসলামের আধ্যাত্মিক ধারা প্রতিষ্ঠায় তাঁর বিশাল ভূমিকা রয়েছে।

৩. উরওয়া ইবনে যুবাইর (রহ.)।তিনি মদিনার সাতজন প্রধান ফকিহের একজন ছিলেন।ইসলামের প্রথম যুগের ইতিহাস ও হাদিস সংরক্ষণে তাঁর অবদান গুরুত্বপূর্ণ।

৪. মুজাহিদ ইবনে জাবির (রহ.)।তিনি তাফসির বিষয়ে বিখ্যাত ছিলেন।সাহাবি ইবনে আব্বাস (রা.)-এর কাছ থেকে তাফসিরের জ্ঞান গ্রহণ করেছিলেন।

৫. আতা ইবনে আবি রবাহ (রহ.)।মক্কার অন্যতম বড় তাবেঈ ছিলেন।
ইবনে আব্বাস (রা.)-এর শিষ্য এবং ফিকহ ও হাদিসে বিশাল অবদান রেখেছেন।

৬. ইকরিমা (রহ.)।ইবনে আব্বাস (রা.)-এর বিখ্যাত মাওলা (আজাদ দাস)।তাফসির, হাদিস এবং ইসলামী ইতিহাসের ক্ষেত্রে তাঁর জ্ঞান প্রসিদ্ধ।

৭. নাফি‘ (রহ.)।তিনি আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.)-এর মাওলা।
হাদিসের সনদে তাঁর নাম প্রায়ই পাওয়া যায়।

৮. কাতাদা ইবনে দিআমা (রহ.)।তাফসির ও হাদিসে বিখ্যাত এবং সাহাবিদের থেকে সরাসরি জ্ঞান গ্রহণ করেছেন।

৯. সুলাইমান ইবনে ইয়াসার (রহ.)।মদিনার সাতজন প্রধান ফকিহের একজন।ফিকহ ও ইসলামী আইনের ক্ষেত্রে তিনি বিখ্যাত।

১০. রাবি ইবনে খুথাইম (রহ.)।কুফার একজন প্রসিদ্ধ তাবেঈ এবং তাখওয়ার জন্য বিশেষভাবে খ্যাত।

আপনি সিদ্ধান্ত নেন আপনার বাচ্চাদের কে এসব সাহাবী ও তাবেঈদের মতো করে গড়ে তুলবেন নাকি, ওসব আমিরিকান ও ইউরোপীয়দের মতো গড়ে তুলবেন?

আপনার প্রশ্ন থাকতে পারে যে আমরা সবাই কে কি আলেম বানাবো? না সবাই আলেম হতে পারবে না। এটা মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লার বিশেষ নিয়ামত। তবে তাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ জ্ঞান আহরনের সুযোগ দেওয়া দরকার, যাতে সে মুরতাদ, নাস্তিক, স্যাকুলার, মডারেট হয়ে না যায়।

২৪:৩৭
رِجَالٌۭ لَّا تُلْهِيهِمْ تِجَـٰرَةٌۭ وَلَا بَيْعٌ عَن ذِكْرِ ٱللَّهِ وَإِقَامِ ٱلصَّلَوٰةِ وَإِيتَآءِ ٱلزَّكَوٰةِ ۙ يَخَافُونَ يَوْمًۭا تَتَقَلَّبُ فِيهِ ٱلْقُلُوبُ وَٱلْأَبْصَـٰرُ
অর্থ:
“সেসব পুরুষ, যাদেরকে ব্যবসা বা ক্রয়-বিক্রয় আল্লাহর স্মরণ থেকে, সালাত প্রতিষ্ঠা করা এবং যাকাত প্রদান থেকে গাফিল করে না। তারা ভয় করে এমন একদিনকে, যেদিন হৃদয় এবং চক্ষু উল্টে যাবে।”

সালাফদের শিক্ষা সিস্টেমে যদি তাকে তারবিয়াহ্ দেওয়া হয় তাহলে বিজনেস, চাকরি কিছুই তাকে সালাত, যাকাত থেকে বিরত রাখতে পারবে না। তারা ভয় করবে এমন দিন কে যেদিন সবকিছু উলটপালট হয়ে যাবে।

২৪:৩৮
لِيَجْزِيَهُمُ ٱللَّهُ أَحْسَنَ مَا عَمِلُوا۟ وَيَزِيدَهُم مِّن فَضْلِهِۦ ۗ وَٱللَّهُ يَرْزُقُ مَن يَشَآءُ بِغَيْرِ حِسَابٍۢ
অর্থ:
“যাতে আল্লাহ তাদের উত্তম কাজের প্রতিদান দেন এবং নিজ অনুগ্রহে আরও বেশি দান করেন। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা অগণিত রিজিক দান করেন।”

এরপর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা বলছেন, এইভাবে গড়ে উঠা লোকদের কে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা আজর দিবেন। বরং বহুগুণে বাড়িয়ে দিবেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা যাকে ইচ্ছে অঢেল সম্পদ দান করবেন। যারা মনে করে দ্বীনি শিক্ষা অর্জন করলে না খেয়ে থাকতে হবে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা তাদের কে বলছেন। হয়তো তাদের গালে এটা একটা চপেটাঘাত!

আমরা এজন্যই হোম স্কুলিং বা বাড়ির মাদরাসা নামক একটা প্রজেক্ট শুরু করেছি। ইনশাআল্লাহ বিকল্প হিসেবে এটা সেরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *